সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ , ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ফসলরক্ষার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কালো মাটি! বাঁধের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা গণিনগর ষোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ ধর্মপাশায় জলমহাল সেচে মাছ শিকারের আয়োজন,বোরো চাষ ব্যাহতের শঙ্কা যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিন গ্রেফতার জামালগঞ্জে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত দোয়ারাবাজারে জামায়াতের প্রচারণা মিছিল আস্থা যুব উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিত ১৫ হাওরে নির্মাণ হচ্ছে স্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ জেলা কৃষিঋণ মেলা ও প্রকাশ্যে কৃষিঋণ বিতরণ অনুষ্ঠিত গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে জনউদ্যোগের সচেতনতামূলক সভা ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের শীতবস্ত্র বিতরণ জগন্নাথপুরের নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জন সাময়িক বরখাস্ত চাইনিজ নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা ‘মানুষের উৎপাতে’ পাখি নেই টাঙ্গুয়ার হাওরে ফিমেইল একাডেমির সুনাম এখন দেশ-বিদেশে : সাবেক জেলা প্রশাসক জাফর সিদ্দিক জনগণের বিপক্ষে কাজ করলে ৫ আগস্টের মতোই পরিণতি হবে : তারেক রহমান জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জন কারাগারে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অগ্রগতি বিষয়ে মতবিনিময় দেখার হাওরের বড়দৈ কাষ্ঠগঙ্গা বিল শুকিয়ে মাছ শিকার

বাঁধ নির্মাণ নয়, নদী খননই বন্যা নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী সমাধান

  • আপলোড সময় : ৩১-০১-২০২৫ ১২:৩৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩১-০১-২০২৫ ১২:৩৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
বাঁধ নির্মাণ নয়, নদী খননই বন্যা নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী সমাধান
সুনামগঞ্জের হাওরে স্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি ২০২৫) দৈনিক সুনামকণ্ঠের খবরে বলা হয়েছে, “পাহাড়ি ঢল থেকে সুনামগঞ্জের ১৫টি হাওরের ফসল রক্ষায় সরকার স্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে। প্রায় ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এসব বাঁধ তৈরিতে ব্যয় হবে প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘বন্যা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন, জরুরি সহায়তা প্রকল্প’ থেকে এই কাজ বাস্তবায়ন শুরু করছে। চলতি বছরের জুন মাসে এই প্রকল্প শেষ হবার কথা। তবে এই প্রকল্পে কেবল বাঁধ নির্মাণই নয় হাওরাঞ্চলে ফ্লাড ফিউজ নির্মাণ, নদী তীর প্রতিরক্ষা, রেগুলেটর নির্মাণ ও সংস্কার, ভিলেজ ফ্লাডফর্ম নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম রয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা। তবে হাওরের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় সুবিধাভোগী ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ও মতামতে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন হাওরাঞ্চলের পরিবেশবিদরা। না হলে এই প্রকল্পের সুফল মিলবে না বলে মনে করছেন তারা।” উপর্যুক্ত সংবাদ বিবরণীতে প্রকটিত ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পকৌশলের ভেতরে নদী খননের কৌশলটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বেসরকারি পরিসরে মেহনতি মানুষের পাশে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় নেতা জনাব সাইফুল আলম সদরুলের ভাষ্য প্রতিবেদনে উদ্ধৃত করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, “হাওরের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অন্যরকম। একদিকে উন্নয়ন করলে আরেকদিকে প্রতিক্রিয়া হয়। আমাদের বাঁধও প্রয়োজন, প্রয়োজন নদী খনন ও বনায়ন। একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটা করলে প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। তাই পরিবেশবিদ, কৃষিবিদ, মৎস্য বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীসহ স্থানীয় সুবিধাভোগীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প এগিয়ে নিতে হবে। না হলে উপকারের চেয়ে আখেরে ক্ষতিই হবে।” এই কথার সঙ্গে আমরা আপাতত সহমত পোষণ করছি এবং বলছি বাঁধ নির্মাণসহ অন্যান্য কাজেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বাঁধ নির্মাণ ইত্যাদি এতোসব কীছুর পেছনে কারণ কিন্তু একটাই বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের জল। বন্যা হয় জল সরে না যাওয়ার কারণে। বাঁধ নির্মাণের নিহিতার্থ বন্যা নিয়ন্ত্রণ হলে এর নির্গলিতার্থ হলো বন্যার প্রাদুর্ভাব কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া। বাঁধ পানি নিষ্কাশন করে না আটকে রাখে এবং বন্যার কারণ হয়ে উঠে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের ‘বন্যা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন, জরুরি সহায়তা প্রকল্প’ আসলে কোনও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প নয়, উল্টো ‘বন্যা-আমন্ত্রণ প্রকল্প’-এর নামান্তর কিংবা অর্থ উপার্জনের অন্যরকম প্রকল্পকৌশল। ফসলরক্ষার জন্যে চাই বৈশাখ মাসের আগে পরে মিলিয়ে মোট দেড় দুই মাস জুড়ে ধানকাটার সময়টুকুতে কার্যকর বন্যাপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা। নদী খননের মাধ্যমে জল সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়া এর আর কোনও বিজ্ঞানসম্মত বিকল্প নেই। পানি সরে না গেলে বন্যা হবেই আর বাঁধ পানিকে আটকে রাখবে, বন্যার কারণ হবে, কিন্তু বন্যা প্রতিরোধ করবে না। নদীর তীর বাঁধ দিয়ে আটকে দিলে উত্তরের পাহাড় থেকে ঢলের পানি নেমে আসা বন্ধ হয়ে যায় না। অথচ ব্রিটিশ আমলের পর থেকে কৃষকবান্ধব নীতির বিপরীতে উন্নয়কর্ম বজায় রাখার তাগিদে নদী খননকে উপেক্ষা করে আসা হচ্ছে। আমাদের অভিমত হলো, স্থায়ী বন্যানিয়ন্ত্রণের নীতি হিসেবে চলমান অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে নদী খননকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং পরিণতিতে বাঁধ নির্মাণের উপর নির্ভরতা কমাতে হবে যথোপযুক্ত মাত্রায়।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ